৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২

পাভেল আল ইমরান


পরিবর্তন


একবার শুধু তাকিয়ে দেখো আমার দিকে
চিনতে তুমি পারবে না, তা খুবই জানি
আমি যে আজ ক্ষয়ে ক্ষয়ে হারিয়ে গেছি
অট্টহাসির পানির উপর ফেনার মতো
ভাসতে ভাসতে মিলিয়ে গেছি আটলান্টিকের মহাস্রোতে
বটের নিচের লেপ্টে থাকা ছায়ার রঙে
কবিতাতে এঁকেছিলাম তোমার ভ্রু

চিনবে না আজ চেষ্টা করে দেখো ক্ষানিক
অম্ল করে নিজের ভেতর পুষলে যে দম
আজকে সে ভান ধুলো-বালু নোংরা-বিনে কোন মরুতে

আমি তো সেই অস্থির গতির সাদা ঘুড়ি
নাটাই হতে শিকড় ছিঁড়ে হন্য হয়ে ঘুরে বেড়াই
শুন্য হতে মহা শুন্যে
আমাকে আর পাবে কোথায়

স্নানের শেষে তোমার চুলের বসত ছেড়ে
পুকুর নদী সাগর হয়ে উড়ছি কেবল
দিগ্বিদিক এ বায়ুমণ্ডল , ফেঁসে যাওয়া বেলুন যেন

তাকিয়ে দেখো আমার দিকে
চিনতে তুমি পারবে না আর আজ আমাকে
এত বেশি অমানুষ যে হলাম মরে
যে আকাশে নূপুর পরে নেচেছিলে
বিকৃত সেই মুখের ক্ষেতের শস্য বেবাক
ভেঙে ভেঙে তলিয়ে গেছি সৌরভূমে...



মৃত্যু


পচা গোলাপের পিঠে পা পড়তেই
পঞ্চদেশ ঘোরা আমার চপ্পল
হঠাৎ মাথা ঘুরে অকাল প্রয়াণে
টের পাচ্ছি, আমি শাহবাগ পুষ্প বিতানের
সামনের পান্থ

কেউ জানেইনা ,আমি ওইখান থেকে

কয়েকটা রজনীগন্ধার ইষ্টিক কিনেছি
'বার আজিজ মার্কেটের লাচ্ছি খেয়েছি দাড়িয়ে
কেউ জানেইনা আমি জাতীয় কবিতা উৎসবের
পিছন বেঞ্চের মুগ্ধ শ্রোতা ছিলাম

শত বছরের পরেও কত কেউ হেঁটে যাবে
শাহবাগ পুষ্প বিতানের সামনের পথে
আমার সে ছেঁড়া চপ্পল সেখানে থাকবেনা
লাচ্ছির দোকানী মনে রাখবে না সেল সার্ভিস আমার প্রতি

সেই পিছনের বেঞ্চটি দখল করে নেবে কেউ
আমি কিচ্ছু শুনবনা যদিও, চলবে আবৃত্তি
স্বপ্নের ভেতর ব্যর্থ দৌড়ের মতন
ফিরে আসার বিলাপ কেউ শুনবে না
গায়ের সামর্থ্য রবে শুন্য
বিদায়ের মতো বড় অপমান কিচ্ছু নেই
মৃত্যুর চাইতে বড় পরাজয় কিচ্ছু নেই
কবরের চেয়ে ভয়ঙ্কর নির্বাসন কোথাও পাবেনা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন